জীবনে অনেক শিক্ষকের সান্নিধ্য লাভ করেছি । বহু শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজ হয়ত আমি, আমি হতে পেরেছি এবং তাঁদের অনেক উপদেশের উপেক্ষা আজ আমার অনেক ব্যর্থতার কারণ।
তবে, অতীতে গিয়ে ভুল সংশোধন করার ক্ষমতা আমার নেই। সেই সব শিক্ষকের শিক্ষা নতুন করে আহরণ করার উপায়ও নেই কারণ তাঁরা অনেকেই জীবিত নেই।
তাই প্রথাগত ভাবে অন্যের থেকে প্রায় ধার নেয়া শিক্ষক দিবসে তাঁদের স্মরণ করে আমার বার বার মনে হয় তাঁদের তুচ্ছ করেছি। আমার আপস, আমার মেনে নেয়া, আমার পোশাকি দৃষ্টিভঙ্গি কোথাও যেন আমার ইতিহাসের পরিপন্থী। আমার মর্যাদার পরিপন্থী, এবং জাতি হিসেবে আমার অবক্ষয়ের সূচক।
কারণ, যখনই আমি মনে করি বাংলা ভাষার আরোহণের মধ্যেই আমার ভবিষ্যৎ, ধর্মের সংকীর্ণতা থেকে মুক্তির মধ্যেই আমার আত্মজ্ঞান সম্ভব, স্বজাতির অগ্রগমনেই আমার অস্তিত্বের সারমর্ম অবস্থিত --
আমার চেতনার পটভূমি শুধু মাত্র একজন মহামানবের ছায়ামূর্তির আলোয় ভেসে ওঠে
--বিদ্যাসাগর।
আমি প্রতিনিয়ত তাঁর কাছে ফিরে যাই কেননা ২০০ বছরের ব্যবধানের সত্বেও তিঁনি অতন্দ্র এবং তাঁর শিক্ষা প্রাসঙ্গিক; এবং তা এতটাই যে আমার মতন মানুষ সম্পূর্ণ জীবন অতিবাহিত করেও তাঁর শিক্ষার মাত্র ১০ % রূপায়ণ করে উঠতে পারবে। শেষ ৯০ % জন্যে আর এক জন্ম প্রয়োজন।
অতঃএব, শিক্ষক হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আমার কাছে অদ্বিতীয় ও অবিনশ্বর, যাঁর সঠিক ও উপযুক্ত মূল্যায়ন ও মর্যাদায় আমি পূর্ণ।